ছায়াদ হোসেন সবুজ::
পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা। কয়েক দিনের ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহে বোরো ধানের চারা রোপণে কিছুটা দেরি হয়েছে কৃষকদের। তবে শীত ও কুয়াশা কিছুটা কমে যাওয়ায় এখন পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধান লাগানোর কাজ। দিনভর ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
উপজেলার সর্বত্রই এখন বোরো ধানের চারা তোলা, পানি সেচ দেওয়া, জমি তৈরি আর চারা রোপণের হিড়িক লেগেছে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত কৃষক। সকাল ও দুপুরের খাবার মাঠে খাওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে শান্তিগঞ্জে বোরো আবাদের উৎসব শুরু হয়েছে। প্রথম থেকেই আবাদে চাষিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন কৃষি বিভাগের কর্মীরা।
তবে কৃষি শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজের জমিতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বোরো চারা রোপন করছেন। শ্রমিক সংকট থাকায় বোরো রোপনে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে কৃষকদের৷ শ্রমিক পেলেও একজন কৃষি শ্রমিকের দৈনিক মজুরি সাড়ে তিনশো থেকে চারশত টাকা। আর চুক্তিতে এক বিঘা(৩৩ শতাংশ) জমিতে ধানের চারা লাগাতে এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক কামরুজ্জামান জানান, এখান আমাদের নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। বোরো আবাদ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত আমরা। আবাদ করা ছাড়া তো আমাদের চলে না। কিন্তু ধানের বীজ তোলা ও জমিতে লাগানোর জন্য প্রয়োজনমতো শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। সময়মতো শ্রমিক না পেলে ধান লাগাতে দেরি হয়ে যাবে। ফসল ভালো পাবো না, তাই চিন্তায় আছি। যাও দু’একজন পাওয়া যাচ্ছে তারা বেশি পারিশ্রমিক চাচ্ছেন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় , চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২২ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোপণ করা জমির মধ্যে উন্নত ফলনশীল উফশী, হাইব্রিড ও স্থানীয় ধান রয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৮ হাজার ৪২৫ হেক্টর, উফশী ১৩ হাজার ৬১০হেক্টর ও স্থানীয় ১৬৫হেক্টর। এবছর ২ হাজার ১শত কৃষককে সার ও বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে৷ এবং শুধু বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ৪ হাজার ২শত কৃষককে। কৃষি বিভাগের আশা এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ভালো ফসল উৎপাদন হবে।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুর রহমান বলেন , শান্তিগঞ্জে বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। ভালোভাবে তারা যাতে চারা রোপণ করতে পারেন এবং ভাল ফলন পেতে পারেন তার জন্য কৃষি বিভাগ নানা ভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আশা করছি চলতি মৌসুমে বোরো চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।