বিনোদন ডেস্কঃ  
আট বছর সংসার করার পর এবার নতুন করে মুশকিলে পড়েছেন অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান। তাঁর স্ত্রী মারিয়া মিম মিডিয়ায় কাজ করতে চান। কিন্তু সিদ্দিক তাতে রাজি নন। এ নিয়ে স্ত্রীর মন ভার।
পরিচিত লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিম তাঁর স্বামীকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা বলছেন। আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে নিজেই এ কথা জানালেন সিদ্দিক। তাঁর মন্তব্য, ‘আমার আর্থিক অবস্থা এতটা খারাপ না যে আমার বউকে মিডিয়াতে কাজ করে রোজগার করতে হবে। আমি তাকে শতবার বুঝিয়েছি, মিডিয়াতে কাজ করা লাগবে না। সংসার, সন্তান দেখাশোনা করুক। আমার ঘরের রানি হয়েই থাকুক। সে মানতে রাজি না।’
সিদ্দিক জানান, তাঁর স্ত্রী নিজেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যোগাযোগ করে এ অভিযোগ করে ডিভোর্সের কথা বলেছেন। তবে সিদ্দিক চাইছেন সংসার করতে।
সিদ্দিকের কথা, ‘আমার বিরুদ্ধে তো আর কোনো অভিযোগ নেই। আমি নিজে মিডিয়ায় কাজ করি। আমাদের একটা বাচ্চা আছে। এখন দেখা যাবে, আমি থাকব রাঙামাটি, সে যাবে কক্সবাজার শুটিংয়ে। আমাদের বাচ্চাটার কী হবে বলেন তো। এসবের কোনো মানে হয়!’
সিদ্দিক জানান, স্ত্রী মিম ২৬ জুলাই তাঁর বাসা থেকে রাগ করে চলে যান তাঁর ভাইয়ের বাসায়। তিনি বলেন, ‘সে আমার সঙ্গে কোনোভাবেই যোগাযোগ করছে না, করতে দেয় না। আমাকে ব্লক মারছে।’
জানা গেছে, এর আগে সিদ্দিকের স্ত্রী মারিয়া মিম অনিয়মিতভাবে মডেলিং করতেন। মিম বলেছেন, ‘সিদ্দিক মডেলিংয়ে আমাকে ক্যারিয়ার গড়তে দিচ্ছে না। অনেক দিন কাজ থেকে দূরে ছিলাম। সম্প্রতি আবারও কাজে ফেরার চেষ্টা করছি। কিন্তু এখন সিদ্দিক আমার প্রতিটি কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আমাকে কোনো কাজ করতে দিচ্ছে না। আমি যেখানেই কাজ করতে যাই, সেটা জানার পর সেখানে সে না করে দিচ্ছে। দুদিন আগে এফডিসিতে একটি বিজ্ঞাপনের শুটিং ছিল। সেখানেও সিদ্দিক বাধা দিয়ে কাজ করতে দেয়নি।’
মারিয়া মিম বলেন, ‘লম্বা সময় সিদ্দিকের সঙ্গে কাটিয়েছি, আর সম্ভব হচ্ছে না। অনেক চেষ্টা করেও তার কাছ থেকে মিডিয়াতে কাজের অনুমতি পাইনি। গত জুলাই মাস থেকে পরস্পর আলাদা থাকছি। আট বছরের সংসারের ইতি টেনে সিদ্দিককে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগির তাকে ডিভোর্স লেটার পাঠাব।’ তিনি জানান, ১৩ অক্টোবর এফডিসির ৩ নম্বর ফ্লোরে একটি বিজ্ঞাপনে কাজের জন্য নির্মাতা মিমের শিডিউল নিয়েছিলেন। শুটিংয়ের আগের দিন পর্যন্ত মিম জানতেন, বিজ্ঞাপনটিতে তিনি কাজ করবেন। বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন তাঁকে জানিয়েছিলেন, শুটিং হবে। কিন্তু মারিয়া মিম জানালেন, তাঁর পরিবর্তে অন্য এক মডেল দিয়ে বিজ্ঞাপনটির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি মনে করেন, সিদ্দিকই এ বিষয়ে কোনো একটা কারসাজি করেছেন।
নিজে মিডিয়ায় কাজ করছেন, স্ত্রী করলে সমস্যা কোথায়? এমন প্রশ্নে সিদ্দিক বলেন, ‘আমি তো জানি আমাদের মিডিয়ায় শিল্পীদের কী কষ্ট করতে হয়। বুড়ো বয়সে দুস্থ শিল্পী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় সাহায্যের আশায়। আর আমাদের বাচ্চাটা ছোট। নার্সারিতে পড়ছে। আমি চাই না আমার বাচ্চা বুয়ার কাছে বড় হোক। ছেলেটা বর্তমানে আমার কাছে। শুনলাম, সে নাকি আমাকে ডিভোর্স দেবে। আমি আলোচনায় বসতে চাই। মুরব্বিদের নিয়ে আলোচনা করব। তারপর সে ডিভোর্স দিয়ে মিডিয়ায় কাজ করুক, তার আগে কোনোভাবেই কাজ করতে পারবে না। যদি সিদ্ধান্ত নিয়েই নেয়, তবে আমি আমার অভিযোগগুলো বলব সবাইরে।’
২০১২ সালের ২৪ মে মারিয়া মিমকে ভালোবেসে বিয়ে করেন সিদ্দিক। ছোট পর্দার তুমুল জনপ্রিয় এ অভিনেতার দর্শকনন্দিত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘হাউসফুল’, ‘গ্র্যাজুয়েট’, ‘মাইক’, ‘হাম্বা’, ‘বন্ধু এবং ভালোবাসা’, ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ’, ‘ড্যান্স ডিরেক্টর’, ‘চৈতা পাগল’, ‘বরিশালের মামা ভাগনে’, ‘আমাদের সংসার’, ‘রেডিও চকলেট’ ইত্যাদি।