বিশেষ প্রতিনিধি :
তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের হাঁস পালনকারী দলের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে আসেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ড এ্যামবেসির ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রামের ফাষ্ট সেক্রেটারী ডার্ক আডিমা। ২৬ মার্চ সোমবার মাঠ পরিদর্শনকালে তাঁর সাথে ছিলেন বাংলাদেশে অবস্থিত নেদারল্যান্ড দূতাবাসের নিযুক্ত সিনিয়র পলিসি এডভাইজার উসমান হারুনি। কেয়ার বাংলাদেশ-এর কারিগরি সহযোগীতায়,আইডিয়া’র বাস্তবায়নে শ্রীপুর পূর্বপাড়া হাঁস পালনকারী দলের হাঁসের ডিম উৎপাদনে ও বিভিন্ন কার্যক্রমের অগ্রগতি এ পরিদর্শনের মূল লক্ষ্য। ডার্ক এডিমা পরিদর্শণকালে শ্রীপুর পূর্বপাড়া হাঁস পালনে জড়িত সদস্যদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তাহারা বন্যা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগে কিভাবে খাপ খাওয়াচ্ছেন,বন্যার ছয় মাস কি করেন ইত্যাদি,এছাড়াও হাঁস পালন ও উৎপাদন বিষয়ে স্থানীয় সেবা প্রদানকারী,বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত এ্যক্টরস,সেবা গ্রহণের ধরণ,কমিউনিটির সমাজসেবকদের সাথে আলোচনা করেন তিনি। এসডিসি-সমষ্টি প্রকল্প যেসকল সাব-সেক্টর নিয়ে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হল হাঁস পালন। হাঁস পালনে উৎপাদনের সাথে যেসব এলাকার সদস্যরা নিবিড়ভাবে জড়িত রয়েছেন তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নে অবস্থিত শ্রীপুর গ্রাম। শ্রীপুর পূর্বপাড়ার সদস্যরা হাঁস পালন উৎপাদনের সাথে অনেক বছর ধরে জড়িত আছেন। আলোচনার মাধ্যমে জানা গেছে এ এলাকার কৃষকদের আয়ের অারেকটি আয়ের অন্যতম উৎস হচ্ছে হাঁস পালন। আগে তারা দেশি হাঁস পালন করতেন বিধায় ডিম কম উৎপাদন হতো,এখন তাহারা বিদেশী খাকি খ্যাম্বেল পালন করছেন। এতে দেশের বাজারে বিশেষ করে সুনামগঞ্জ,তাহিরপুর সহ সর্বত্র জায়গায় এর চাহিদা মূলত বেড়ে গেছে,এতে সদস্যরা উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি তার সুফলও পাচ্ছে। এদিকে সামাজিক পরিবর্তন সঞ্চালক রোকেয়া বেগম ও সুবর্ণা আক্তার বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠাণের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে কিভাবে বিভিন্ন সেবা উৎপাদক ও সামাজিক দলের কাছে পৌঁছে দেন তার সার্বিক বর্ণনা করেন। দলের মোট পয়ত্রিশ জন সদস্যের পক্ষ থেকে নূরআলম,জুলহাঁস,আফরোজা,রওশন আরা,জুঁই,তানিয়া,রেহানা,পান্না,শামীমা,রফিকা দল গঠন প্রক্রিয়া,এলাকার সমস্যা চিহ্নিত করণ এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী কমিটির মধ্যমে তা সমাধান করণের নানান দিক তুলে ধরেন। পাশাপাশি দলের মহিলা উদ্যোক্তা ফেরদৌস আরা হাঁস পালন ও সমষ্টি প্রকল্পে অন্তর্ভূক্তির মধ্যমে তার জীবনমান পরির্তনের দিক তুলে ধরেন। পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়ে তৈরি টিউটোরিয়াল সেন্টারের শিক্ষিকা রাইফা আক্তার তার সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরেন। প্রকল্প কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম প্রকল্প বাস্তবায়নের নানান দিক নিয়ে তার মতামত ব্যাক্ত করেন। পরিশেষে দলের সকল সদস্য স্থানীয়ভাবে হাঁসের বাচ্চা ও কৃত্রিম খাবার তৈরি করার ক্ষেত্রে তাদের সহায়তা করার জন্য পর্যবেক্ষকগণের কাছে সহায়তা কামনা করেন। আইডিয়া-এসডিসি-সমষ্টি প্রকল্প,উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা সমাপন চাকমা ও স্থানীয় সেবা প্রদানকারী শাহ আলম এর যৌথ প্রচেষ্টায় হাঁস পালনে ডিম উৎপাদনে তার গুনগত মান উন্নয়নে কৃষকদের পদ্ধতিগতভাবে হাঁস পালনে উন্নয়নের ক্ষেত্রে উৎসাহী করণে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছেন। পরিদর্শণকাল আরও উপস্থিত ছিলেন কেয়ার বাংলাদেশের রিজিওন্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুল মালেক খাঁন,আইডিয়ার সমষ্টি প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার সিরাজুল ইসলাম সিরাজ,সমাজ সেবক রোকেয়া বেগম ও সুবর্না আক্তার,ডিম কালেক্টর আকিক মিয়া,এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইডিয়া এসডিসি সমষ্টি প্রকল্পের,মাঠ সহায়ক বিদেশ রঞ্জন চৌধুরী,সামিউল কবির ও শ্যামলেন্দু দে প্রমুখ। উল্লেখ্য,আইডিয়া-এসডিসি-সমষ্টি প্রকল্প দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত এবং নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে-আয় বৃদ্ধি,পুষ্টিমান সমৃদ্ধ খাবার গ্রহন,উন্নততর স্বাস্থ্য ও শিক্ষা লাভের সুযোগ সৃষ্টি করার মাধ্যমে জীবন মানের উন্নয়ন ঘটানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।