দক্ষিণ সুনামগঞ্জ২৪ ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও লাইভ প্রচারের ঘটনায় সিলেট ও সুনামগঞ্জজুড়ে তোলপাড় চলছে।

খোদ ওসির কক্ষে ধারণ করা এই ভিডিও পরবর্তীতে ছাতক টু সুনামগঞ্জ নামক একটি ফেইসবুক ভিত্তিক একটি পেইজে লাইভ করা হয়। আপলোড দেয়ার পর মুহুর্তেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ‘ছাতক টু সুনামগঞ্জ’ নামক ফেইসবুক ভিত্তিক কথিত একটি নিউজ পেইজে লাইভটি প্রচারের পর হাজার হাজার মানুষ ভিডিওটি দেখেন। ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা শুনে ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য দোষীরা পালিয়ে যাবে। এটা পুলিশের খামখেয়ালিপনা বলে লাইভ চলাকালে অনেকেই মন্তব্য করেন।

খোদ পুলিশের মোবাইলে ধারণ করা গোপনীয় এই ভিডিও কীভাবে এই পেইজে চলে গেলো তা নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। পরবর্তীতে প্রায় এক ঘন্টা পর ভিডিওটি ডিলিট করে দেয়া হয়। কিন্তু এ প্রতিবেদকের কাছে স্ক্রিন রেকর্ডার দিয়ে লাইভ চলাকালীন ওই ভিডিওটি সংরক্ষিত আছে।

ভিডিওতে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিসহ ছাতক থানার ওসি নাজিম উদ্দিন, গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাওঁ ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমানসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দেখা যায়।

এদিকে, সারাদেশে ভূইফোড় এসব ফেইসবুক পেইজের বিরুদ্ধে অভিযান চললেও উদ্ভট নাম ব্যবহার করে চলা এই পেইজে প্রায় সময় ছাতক থানার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড প্রচার করতে দেখা যায়। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ছাতক থা পুলিশ সমালোচিত হলেও টনক নড়েনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।

ছাতক থানার ওসি নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি এগুলো করিনি। পরে অন্য কেউ হয়তো করেছে। ফেইসবুক লাইভ প্রচার করা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

এ ব্যাপারে বিশিষ্ট আইনজ্ঞ অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, মামলার তদন্ত কার্যক্রমে জড়িত পুলিশ কতৃপক্ষ কার্যক্রম নিরপেক্ষ রাখতে আরো সতর্ক থাকা উচিৎ ছিল।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, আমি অবগত ছিলাম না। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

এ ব্যাপারে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি।

উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টার দিকে আখলাকুর রহমান ওরফে আখলাদ (৩৫) নামের এক ব্যবসায়ী উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ বাজার থেকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে খুন করে পালিয়ে যায়।

রাতেই গ্রামের মাঠের ক্ষেতের জমি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। আখলাদ গোবিন্দগঞ্জ -সৈদেরগাও ইউনিয়নের মোল্লাআতা গ্রামের জাহির আলীর পুত্র ও গোবিন্দগঞ্জ বাজারের একজন ব্যবসায়ী।

এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে একই ইউনিয়নের গোবিন্দনগর গ্রামের ফজলু মিয়ার পুত্র আবু সুফিয়ান সোহাগ ও বিশ্বনাথ উপজেলার দিঘলী-চাকলপাড়া গ্রামের আশরাফুল আলমের পুত্র আলীম উদ্দিনকে নিজ বাড়ি থেকে গত বুধবার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আসামিরা আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন।

সুত্রঃ সিলেটভিউ২৪ ডটকম