সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে..

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮
  • ৫৭৭ বার

ছায়াদ হোসেন সবুজ:: ৮ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। উপজেলায় নেই কোনো সরকারি চিকিৎসালয়। নেই কোনো বেসরকারি হাসপাতালও। এতে দীর্ঘদিন ধরে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাওর বাওরের উপজেলার সর্বসাধারণ। উপজেলাবাসীর দুর্দশার কথা চিন্তা করে একটি সরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করার চেষ্টায় সক্রিয় হয়ে পরেন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্থানীয় সাংসদ এম এ মান্নান এমপি। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৩ তলা ভবনের একটি হাসপাতাল নির্মাণ হচ্ছে। হাসপাতাল ভবনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এতে করে লক্ষাধিক মানুুুুষের বসতি দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা বাসীর দুর্ভোগ হ্রাস পেতে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন পর উন্নত চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করতে দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায় – প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান যখন ২০০৮ সালে জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ সংসদীয় এলাকা থেকে এশিয়া মহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন; তখন থেকে নিজ উপজেলাবাসীর উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ করতে একটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে লেগে পরে যান যখন দ্বিতীয়বার সংসদে এ এলাকার প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান ঠিক তখন থেকে। দ্বিতীয়বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনা তাঁকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। এ দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি প্রতিশ্রুতির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ করতে উঠে পরে যান এবং ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৩ তলা একটি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করার কার্যাদেশ নিশ্চিত করেন। কার্যাদেশের অনুমতিপত্র পেয়ে দ্রুত গতিতে হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের মতে – এ উপজলাবাসী পূর্বে উন্নত ও প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। কোনো ধরনের অসুস্থতা আক্রমণ করলে ভালো চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। যদি ভালো চিকিৎসা নিতে হয় যেতে হয় সুনামগঞ্জ সদর, জগন্নাথপুর ও ছাতক কৈতক হাসপাতালে। আর বড় ধরনের কিছু ঘটলে প্রয়োজনমত যেতে হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর যদি যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছানো যায়না ঘটে যায় অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা। এর ফলে অকালে ঝরে যায় অনেক প্রাণ। শুধু তাই নয় উপজেলার আটটি ইউনিয়নের উল্লেখ যোগ্য লোকজনও অসহায়। তাঁরা সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ঔষধ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন আর এসব সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে না তাদের। অকালে আর ঝরে যাবে না তরতাজা প্রাণ। এলাকাবাসীর শুধু একটি দাবি দ্রুত যেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা শুরু হয়। আর এসব সেবা নিয়ে মরতে চান ৬৫ বছর বয়সী রহিম উল্লা।

“উপজেলার মির্জাপুর এ বৃদ্ধ বলেন- আমরাতো আর বেশিদিন থাকতাম নায়। আল্লাহ যতোদিন রাখেন দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়ে যেনো নিজের উপজেলার এ হাসপাতাল থেকে ডাক্তারি করাইতে পারি। আর হাসপাতালে ডাক্তারি করাইলে ওষুধ সরকারও দেয়। আমরা যাতে ঠিকঠাক মতো ডাক্তার দেখাউয়া ওষুধ আনতা পারি। আমরা মরে গেলে আমরার নাতি পত্নী এ হাসপাতালে আইবো।”

“তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সাংসদ এমএ মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন- আমরার প্রধানমন্ত্রী ভালা মানুষ। তাইন আমরার এলাকার মন্নান সাবরে এমপি মন্ত্রী বানসইছন। মন্নান সাব আমরার লাগি কাম কররা। আল্লাহ তাইনরে বেশিদিন বাঁচাক।”

গর্ভবতী সাহেলা বেগম বলেন- আমরা নারীদের অসুখ-বিসুখ হলে ও তার রোগ নির্ণয় করতে হলে আমাদের এলাকায় নেই তেমন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আর সকল চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করতে পারেন না। এতে করে আমাদের নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের মতো যারা মোটামুটি সামর্থ্যবান তাঁরা অন্যত্র গিয়ে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারছেন। যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ তারা এসব করতে পারছেনা। ফলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সাহেলা বেগম উদাহরণ টেনে বলেন- আজ গুনগত মানের চিকিৎসক থাকলে আজ শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো না। আমরা চাই দ্রুত আমাদের সেবা নিশ্চিতকরণ করতে সংশ্লিষ্টরা যাতে সদয় হন।

কথাপ্রসঙ্গে তিনি বলেন- আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল কমিউনিটি ক্লিনিক। এ ক্লিনিক থেকে আমরা সামান্য সেবা পেয়ে থাকি।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনের কার্যক্রম নিয়ে কথা হয় ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল আহমেদর সাথে। উজ্জ্বল আহমেদ বলেন-মন্ত্রী (এমএ মান্নান) স্যারের নির্দেশনায় দ্রুত গতিতে চলছে ভবন নির্মাণের কাজ। আমরা আশাবাদী কোনো ধরনের সমস্যা না থাকলে যথাসময়ের পূর্বে কাজ শেষ করতে পারবো।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ জসিম উদ্দিন বলেন- ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হলেই চিকিৎসার যাত্রা শুরু হবে। নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবো মানুষের উন্নত চিকিৎসা সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হলে আমরা চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ