বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৩ অপরাহ্ন

pic
নোটিশ :
পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে!! জেলা উপজেলায় প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে বিস্তারিত জানতে : ০১৭১২-৬৪৫৭০৫
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ দৃশ্যমান; জনমনে আশার আলো

দক্ষিণ সুনামগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ দৃশ্যমান; জনমনে আশার আলো

ছায়াদ হোসেন সবুজ: হাওরাঞ্চলের জেলা সুনামগঞ্জের আরেকটি প্রত্যন্ত ও হাওরবেষ্ঠিত উপজেলা হচ্ছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা। হাওরবেষ্টিত এই উপজেলাটি আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।

হাওরবেষ্টিত এ উপজেলায় কয়েক লক্ষাধিক মানুষের বসবাস থাকলেও এখানে কোনো সরকারি চিকিৎসালয় না থাকায় সবসময় বিপাকে পড়েন সাধারন মানুষ। শুধু তাই নয় এই উপজেলায় কোন বেসরকারি হাসপাতালও না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী। তাই উপজেলাবাসীর, সমস্যা ও দুর্দশার কথা চিন্তা করে একটি সরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করার চেষ্টায় সক্রিয় হয়ে পরেন সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী সুনামগঞ্জ-৩ আসনের বারবার নির্বাচিত সাংসদ আলহাজ্জ্ব এম এ মান্নান এমপি। তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় ফসল হিসেবে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৩ তলা ভবনের একটি হাসপাতাল নির্মাণ হচ্ছে দক্ষিণ সুনামগঞ্জে। হাসপাতাল ভবনের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। হাসপাতালে নির্মানাধীন ভবন গুলো আজ দৃশ্যমান। তাই আনন্দ ও খুশিতে আত্মহারা হাওরের জনপদ দক্ষিণ সুনামগঞ্জ। আর এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ শেষ হলে লক্ষাধিক জনতার বসতি দক্ষিণ সুনামগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ হ্রাস পাবে। দীর্ঘদিন পর উন্নত চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করতে দেখা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায় – প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান যখন ২০০৮ সালে জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ সংসদীয় এলাকা থেকে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হন, তখন থেকে নিজ উপজেলাবাসীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতকরণ করতে একটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সেই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে লেগে পড়েন দ্বিতীয়বার সংসদে এ এলাকার প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পান ঠিক তখন থেকে। দ্বিতীয়বার সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সরকার প্রধান শেখ হাসিনা তাঁকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন। এ দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি প্রতিশ্রুতির স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণ করতে উঠে পরে যান এবং ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৩ তলা একটি হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করার কার্যাদেশ নিশ্চিত করেন। কার্যাদেশের অনুমতিপত্র পেয়ে দ্রুত গতিতে হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে। শুধু হাসপাতাল নয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের উন্নয়ন ছোয়ায় বিকশিত হচ্ছে অবহেলিত দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলাটি।

এ উপজেলাটি আজ উন্নয়নে পরিপূর্ণ। জনগনের সকল সমস্যার সমাধান হচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্থানীয়রা জানান, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজলাবাসী পূর্বে উন্নত ও প্রাথমিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। কোনো ধরনের অসুস্থতা আক্রমণ করলে ভালো চিকিৎসা পেতেন না তারা। অনেক সময় উন্নত চিকিৎসার অভাবে মারাও যেতেন অনেকে। ভালো চিকিৎসা নিতে তাদের যেতে হত সুনামগঞ্জ সদর, জগন্নাথপুর ও ছাতক কৈতক হাসপাতালে। আর বড় ধরনের কিছু ঘটলে প্রয়োজনমত যেতে হত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আর যদি যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছানো যায়না ঘটে যেত অনাকাঙ্কিত দুর্ঘটনা। এর ফলে অকালে ঝরে পড়ত অনেক প্রাণ। এক কথায় এ উপজেলাবাসী সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ঔষধ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এখন আর এসব সেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে না তাদের। তাদের হাতের নাগালেই পাওয়া যাবে উন্নত চিকিৎসা। অকালে আর ঝরে যাবে না তরতাজা প্রাণ। এলাকাবাসীর শুধু একটি দাবি দ্রুত যেন সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা শুরু হয়। আর এসব সেবা নিয়ে মরতে চান ৭৫ বছর বয়সী ছকির আলী।

উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের এ বৃদ্ধ বলেন- আমরাতো আর বেশিদিন থাকতাম নায়। আল্লাহ যতোদিন রাখেন দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেয়ে যেনো নিজের উপজেলার এ হাসপাতাল থেকে যেন ডাক্তারি করাতে পারি।দেখে ভালো লাগছে দ্রুত গতিতে অনেক শ্রমীক দিয়ে চলছে আমাদের হাসপাতালের কাজ। ছকির আলী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সাংসদ এমএ মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন-আমাদের শেখ মুজিবের কন্যা অনেক ভালো মানুষ। তিনি আমদের এলাকার ছেলে এম এ মান্নান সাহেবকে আমাদের উন্নয়নের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন। আর মান্নান সাহেব আমাদেরকে সবধরনের উন্নয়ন দিয়ে ভরপুর করছেন। আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন এই সৎ মানুষ এম এ মান্নান সাহেবকে দীর্ঘ হায়াৎ দান করেন। আর আমরা আশা করি আমাদের আর কোন সমস্যা থাকবেনা।

এম এ মান্নান এখন পরিকল্পনা মন্ত্রী। এদিকে এক গর্ভবতী মহিলা খালেদা বেগম বলেন- আমরা একজন নারীর নানান ধরনের রোগ হয়ে থাকে। রোগ নির্ণয় করতে হলে আমাদের এলাকায় নেই তেমন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। আর সকল চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করতে পারেন না। এতে করে আমাদের নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের মতো যারা মোটামুটি সামর্থ্যবান তাঁরা অন্যত্র গিয়ে উন্নত চিকিৎসা সেবা নিতে নিতে পারছেনা। কিন্তু যাদের আর্থিক অবস্থা খারাপ তারা এসব করতে পারছেনা। ফলে তাদের কে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সাহেলা বেগম উদাহরণ টেনে বলেন- আজ গুনগত মানের চিকিৎসক থাকলে আমাদের শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো না।

আমরা চাই দ্রুত আমাদের সেবা নিশ্চিতকরণ করতে সংশ্লিষ্টরা যাতে সদয় হন। কথাপ্রসঙ্গে তিনি বলেন- আমাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল কমিউনিটি ক্লিনিক। এ ক্লিনিক থেকে আমরা সামান্য সেবা পেয়ে থাকি। এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল আহমেদ জানান, মন্ত্রী (এমএ মান্নান) স্যারের নির্দেশনায় দ্রুত গতিতে চলছে ভবন নির্মাণের কাজ। আমরা আশাবাদী কোনো ধরনের সমস্যা না থাকলে যথাসময়ের পূর্বে কাজ শেষ করতে পারবো। আর কাজের মানও অনেক ভালো। এখানে উন্নত মানের বালু পাথর, সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কর্তৃপক্ষ কে তার কাজ বুঝিয়ে দিতে পারবো।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017 DakshinSunamganj24.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com